তিতাসের পূর্বাঞ্চলটা এই সময়ে ইটখােলাগুলাের ইটপােড়ার গন্ধে প্রায় আচ্ছন্ন। আগে এ জায়গাগুলােতে গরুর বাথান এবং শহরের দুধের কারবারিদের গাইগরু পােষার একচ্ছত্র অধিকার ছিল। আগে লােকেরা এ চরের রাখালদের বলতাে খলার মানুষ। এখন ক্রমাগত তা সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। খলাগুলাে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে ইট পােড়াবার বিশাল চুল্লি এবং চিমনিতে ছেয়ে গেছে। তবে বাথানের রাখালরা একেবারে উচ্ছেদ হয়ে যায়নি। তারা উত্তরে-দক্ষিণে বাথানগুলাে সরিয়ে এনেছে। নতুন ইটের গাদা যদিও মাইল মাইল ছড়িয়ে আছে কিন্তু বাথানগুলােও স্বাভাবিক নিয়মে তাদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে চাইছে। আগেও এসব অঞ্চল ছিল আইন-কানুনহীন। এখনাে তেমনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর অর্থাৎ জেলা সদরের পুলিশ পারতপক্ষে নদী পেরিয়ে এ পাড়ে আসে না। সবাই জানে ওটা হলাে অপরাধী, চোর, ডাকাত, রাখাল এবং আত্মগােপনকারী দৃষ্কৃতিকারীদের এলাকা। আইন হলাে শহর বা সদরের জন্য। গরু বা গরুর রাখালদের শহরের মানুষ কোন অবস্থাতেই মানুষ বলে অস্বীকার করে না।
সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারে গরুগুলাে বাথানে ঢুকিয়ে কামাল ও কালা তাদের নিজেদের বাসস্থান একটা তর্জার চালার নিচে এসে তাদের নারকেল খােলের হুকায় তামাক সাজাল। হুকাটায় টান দিতে দিতে কালা মুখ তুলল কামালের দিকে, হারামজাদা তাে এখনাে ফিরল না, উস্তাদ। আমি কি চুলা জ্বালিয়ে ভাতটা ফুটিয়ে নেব? আজ আমার রাধার কথা ছিল না। কিন্তু ওই হারামজাদা তােরাব যদি আজকেও একটা মাগিকে যােগাড় করে নিয়ে আসতে না পারে তবে আমি তার মুখে গরম ফ্যান ঢেলে দেব।
কামাল এ কথার কোন জবাব না দিয়ে হাত বাড়িয়ে ডাবাটা একরকম কালার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে টানতে লাগল। অনেকক্ষণ পর্যন্ত টেনে কালার হাতে হুকোটা ফিরিয়ে দিতে দিতে বলল, আয় ঘাটের দিকে যাই। আমার মনে হয় আজ তােরাব একটা বুড়ি হলেও যােগাড় করে আনবে। কতদিন মাইয়া লােকের গন্ধ খুঁকি না। আমি ততা ওকে বলে দিয়েছি দত্তখলার ঋষিপাড়া থেকে যে করেই হােক ভুলিয়ে ভালিয়ে একটা মাগিকে যােগাড় করে নিয়ে আসবে। আমাদের আবার চামার-কুমার দিয়ে! বেটি মানুষ হলেই হয়। হাত দিয়ে তলাটা দেখলে গাইয়ের মতাে ভেজা লাগলেই হলাে। কি কস, কালা?….
কালার মুখে একটা অমায়িক হাসি ফুটে উঠল। দুমড়ানাে রেখাবহুল চেহারার মধ্যে একটু রােদের ঝিলিকের মতাে মনে হলাে। আপনি যা কন না উস্তাদ! ষাড়েরও শুনলে পানি এসে যায়।
কামাল ও কালা উঠে দাঁড়াল। তারা ছাউনিটার বাইরে এসে তিতাসের আঘাটার দিকে হাঁটা শুরু করল যেন দুটি বিশালাকার দৈত্য সন্ধ্যার নিমজ্জমান সূর্যের বিপরীত দিক থেকে চলেছে অমৃতের সন্ধ্যানে। ইটপােড়ার গন্ধটা এখন তীব্র হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে। একদিকে সূর্য ডুবে যাচ্ছে। অন্যদিকে আকাশে ফুটে উঠেছে অসংখ্য তারার জোনাকি। সব নদীরই একটা গাত্রগন্ধ আছে। পদ্মার মেঘনার ব্রহ্মপুত্রের। তিতাসেরও একটা নিজস্ব জলীয় গন্ধে চরের মানুষ অভ্যস্ত। গন্ধটা মাখনা, শালুক, পানিফল, কলমি ঝােপ ও পানকৌড়ির গায়ের মেছাে গন্ধের মতাে এক ধরনের সংমিশ্রিত সৌরভ যেন বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে সন্ধ্যায়। এর সাথে মিশ্রিত হয় বাথানের যাঁড়ের গায়ের গন্ধ, গাইয়ের শরীরের গন্ধ, গােবরের গন্ধ। এ সময়টাকে অতীতে তিতাসপাড়ের রাখালেরা বলত গােধূলিবেলা। বিস্তীর্ণ চরের বেড়ে ওঠা ঘাস খাইয়ে গাভী ও ষাঁড়গুলাে নির্দিষ্ট বাথানে ফিরিয়ে আনার সময়। আজ আর এ অবস্থা কই? এখন গােধূলি শব্দটা নিশ্চয় রাখালদেরও হাসির উদ্রেক করে। কারণ চিমনির ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরাে এলাকাটা হয়ে গেছে শুধু পােড়ার গন্ধে নিমজ্জমান। ইটপােড়ার গন্ধের মধ্যে একটা দগ্ধতার জ্বালা আছে। যা অনভ্যস্ত লােকের নাকে গেলে মনে হয় নাসারন্ধ্রে জ্বালা ধরে গেছে। এ সময়ের এখন একটা নামকরণ হওয়া উচিত। গােধূলিবেলা শব্দটা এখন শুধু বৃদ্ধ রাখালদের কল্পনায় আছে। বাস্তবে তাে দগ্ধ মাটির গন্ধ ছাড়া এখানে আর কোন গন্ধের আভাস মাত্র নেই। কালা ও কামাল হাঁটতে হাঁটতে নদীর ঘাটে চলে এলাে। প্রকৃতপক্ষে এখানে কোন ঘাট নেই। কেউ এসে কোসা নাও নদীর পাড়ে টেনে তুলে খলার দিকে রওনা হয়। ঘাট নেই বলেই রাখালরা বলে আঘাটা। তিতাসের এদিকের পাড় তেমন উঁচু নয়। বলা যায়, নদীর প্রায় সমান্তরাল। জোয়ার এলে তিতাসের পানি চরের ওপর বেশ খানিকটা উঠে আসে। আবার নেমেও যায় যথারীতি। কামাল নদীর একটু উঁচু ডাঙায় এসে বসে পড়ল। হাতের ইশারায় কালাকে বলল, এখানেই বইসা যা বেটা। কালাও তার পাশে বসে পড়ল। রাইত হইয়া গেল উস্তাদ। হারামজাদা তােরাইব্যা এখনাে ফিরল না? ও যদি শহরে গিয়া থাকে তাহলে আইতে তাে একটু দেরি অইব জানি। কিন্তু সুরুজ ডুইবা গেছে কত আগে। শালার দেখা নাই। ভাতও রানলাম না। একটু পরেই তাে পেটে জ্বালা ধইরা যাইব। হায়রে কালা, শালা আমার। এখুনি যদি তােরাইব্যা একটা মাগি লইয়া ফিরে তইলে তাের পেটের জ্বালার চেয়ে চেটের জ্বালা লাফ দিয়া উঠব। ঠিক কইছি না? এই কথায় কালা শব্দ করে এক ধরনের অদ্ভুত হাসি হাসল। লুব্ধ, ক্ষুধার্ত, অপেক্ষায় অসহিষ্ণু রাখালের হাসি। অই দেখ, আইতাছে। তােরাইব্যা আইতাছে। সাথে লইয়া আইছেরে। তাের মাসিমারে লইয়া আইছে ।
নতুন ভিডিও গল্প!
লোভী ভাবির লুইচ্ছা দেবর ll Lovi Vabi ll 2021 Hot!
- Roser Babi | রসের ভাবি | ভিডিও
- টাকা ধার দিবে বলে ভাবির সাথে ফস্টিনস্টি ll FostiNosti ll 2021
- পার্কের ভিতরে দিনে দুপুরে এসব কি চলছে
কোশটা বাবার কেরামতি!
- খালাতো বোন যখন গার্লফ্রেন্ড(ভিডিও)
- স্বামী অনুপস্থিতিত সুযোগ নিলো পুরান প্রেমিক (ভিডিও)
ননদের স্বামীর সাথে ফস্টিনস্টি ।। Bangla Short Film 2020 (ভিডিও)
সুন্দরী মেয়রে সঙ্গে কিভাবে সুযোগের স্বদব্যবহার করলো দেখুন(ভিডিও)
Tags: অপেক্ষায় অসহিষ্ণু, আল মাহমুদ, ক্ষুধার্ত, নিলক্ষার চর, লুব্ধ
Comments are closed here.